রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন
ডেস্ক রিপোর্ট:
ইউক্রেনে আটকে থাকা বাংলাদেশি জাহাজ বাংলার সমৃদ্ধিতে রাশিয়ার রকেট হামলায় বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার মো. হাদিসুর রহমান আরিফের (২৯) নিহত হয়েছেন(ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)। তাঁর মৃত্যুতে বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।
স্বজনদের দাবি, যে করেই হোক হাদিসুরের মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হোক। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ছেলেকে হারিয়ে পাগলপ্রায় মা-বাবা। পরিবারের পক্ষ থেকে ছেলের মরদেহ দেশে আনার জন্য সরকারের কাছে আকুতি জানিয়েছেন।
নিহত হাদিসুরের বাড়ি বরগুনার বেতাগী উপজেলার হোসনাবাদ ইউনিয়নের কদমতলা বাজারসংলগ্ন চেয়ারম্যান বাড়ির বাসিন্দা মো. আবদুর রাজ্জাক (অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক) ও আমেনা বেগম দম্পতির বড় ছেলে।
নিহতের ছোট ভাই তারেক বলেন, ‘গতকাল বুধবার শেষবারের মতো হাদিসের সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের মুঠোফোনে কথা হয়েছিল। হাদিস ইউক্রেনে আটকে থাকার কথা আগেই পরিবারকে জানিয়েছিলেন। বড়ভাই হাদিসুর পরিবারের সবার কাছে দোয়া চেয়েছিলেন যেন নিরাপদে বাড়িতে ফিরতে পারেন।’
তারেক আরও জানান, ‘চার ভাইবোনের মধ্যে হাদিসুর রহমান দ্বিতীয়। চট্টগ্রাম মেরিন একাডেমি থেকে ৪৭ ব্যাচে লেখাপড়া শেষ করে বাংলার সমৃদ্ধি জাহাজের থার্ড ইঞ্জিনিয়ার পদে যোগ দেন হাদিসুর। এবার বাড়ি ফিরলেই হাদিসুরকে বিয়ে করানো হবে বলে পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। পাঁচ দিন আগে হাদিসুর তাঁর মা আমেনা বেগমকে মোবাইলে জানিয়েছিল যুদ্ধে আটকা পড়ার কথা। তখন থেকেই আমরা শঙ্কায় ছিলাম, শেষ পর্যন্ত সেটাই সত্য হলো। এখন মরদেহ দেশে আনার বিষয়ে আরও বেশি দুশ্চিন্তায় আছি। আমরা জেলা প্রশাসকের সহযোগিতায় মরদেহ দেশে আনার চেষ্টা করব।’
হাদিসুর মা আমেনা বেগমের ছেলের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকে শোকে পাগলপ্রায়। বাবা আবদুর রাজ্জাক বাকরুদ্ধ।
আমেনা বেগম বিলাপ করে বলেন, ‘বাজানে মোরে কইছে, এইবার বাড়তে আইয়া ঘর উডাইবে, আর ভাঙা ঘরে থাহন লাগবেনা। ঘরহান উডান অইলে বিয়া কইরা বউ ঘরে আনবে। মোর পোলাডার লাশটা আইন্না দ্যান, মোর পোলাডারে মুই একনজর দেকমু, আর কিচ্ছু চাইনা।’
এ বিষয়ে বরগুনা জেলা কর্মসংস্থান ও জনশক্তি কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক শাহাবুদ্দিন আহমেদ জানান, নিহত হাদিসুরের মরদেহ দেশের আনার ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে।